এই চৈত্রের দুপুর রচনা টি যেকোন ক্লাসের জন্য। যারা ক্লাস ৭ম শ্রেনীতে আছে তাদের জন্যও এই চৈত্রের দুপুর রচনা টি। আবার ক্লাস দশম শ্রেনীতে আছো তাদের জন্য এই চৈত্রের দুপুর রচনা । অর্থাৎ ক্লাস ৭ম শ্রেনী থেকে ১০ম দশম শ্রেনী পর্যন্ত সবার প্রযোজ্য এই চৈত্রের দুপুর রচনা । রচনাটি পড়ার আগে তোমরা রচনা লেখার নিয়ম ও সুচিপত্রটি দেখা নাও।
চৈত্রের দুপুর অনুচ্ছেদ,চৈত্রের দুপুর,গ্রীষ্মের একটি দুপুর রচনা,একটি গ্রীষ্মের দুপুর রচনা class 6,বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা class 8,বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা class 7,একটি গ্রীষ্মের দুপুর রচনা,গ্রীষ্মের একটি দুপুর রচনা class 6,গ্রীষ্মের দুপুর রচনা ক্লাস 6,রচনা গ্রীষ্মের দুপুর,গ্রীষ্মের দুপুর রচনা,,,,

প্রবন্ধ রচনা - প্রবন্ধ রচনার কৌশল - প্রবন্ধের কাঠামো, প্রবন্ধ রচনার দক্ষতা আসবে যেভাবে

 চৈত্রের দুপুর


ভূমিকা: বাংলার ধারাবাহিক ঋতু পরিক্রমায় সর্বশেষ মাস চৈত্র। ফাল্গুনকে সঙ্গে নিয়ে সে উপহার দেয় অ বসন্তকে। ফাল্গুন যখন রঙ্গমঞ্চ থেকে বিদায় নেয়, চৈত্রের ওপর তখন বিশাল দায়িত্ব। পুরোনো বছরের অবসান ঘটিয়ে নতুনের আগমনের পথ তাকেই রচনা করতে হয় ।

চৈত্রের দুপুরে প্রকৃতি : চৈত্র বসন্তের মাস হলেও এতে যেন থাকে কিছুটা গ্রীষ্মের আমেজ। চৈত্রের দুপুরে তা যেন আরও প্রকট হয়। ফাগুনের ফুলের মেলা শেষ হয়ে যায়, থেমে যায় ভ্রমরের গুঞ্জরন। বসন্ত হারাতে বসে তার মাধু প্রকৃতি কিছুটা রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে ওঠে। ঝিমধরা দুপুরে সময় যেন থমকে যায়। কাঠফাটা রোদ্দুরে দগ্ধ হয় প্রভৃতি। গনগনে সূর্য ঠিক দুপুর বেলাতেই যেন পুড়িয়ে দিতে চায় চারপাশ। দারুন অগ্নিবাণে শুধু প্রকৃতি নয়, হৃদয়ও কাতর হয়ে পড়ে। শ্যামল বাংলার সবুজ স্নিগ্ধতা বিলীন হয়ে যায়। প্রকৃতিতে শুধুই বিবর্ণতা আর শুষ্কতা। কোথায় যেন হারিয়ে যায় পাখিদের কলকাকলি, মাঝে মাঝে শুধু তাদের ক্লান্ত করুণ ডাক শোনা যায়। এমন অগ্নির সময়ের বর্ণনা রয়েছে রবীন্দ্রনাথের গানে—

"শষ্ক কানন শাখে ক্লান্ত কপোত ডাকে
করুণ কাতর গানে রে

চৈত্রের দুপুরে ক্লান্ত পাখির ডাক করুণ, বিষণ্ণ গানের মতোই শোনায়। গাছের পাতাগুলো নুয়ে পড়ে, ফুলগুলোর যায় মলিন। মাঝে মাঝে মৃদু হাওয়া বয়। কিন্তু সে হাওয়া যেন আগুনের হলকা। একটু ছায়া পেতে, একটু ঠান্ড বাতাস পেতে প্রাণ ব্যাকুল হয়ে ওঠে। ঘরের ভেতরে অসহনীয় গরম, বাইরে তাপদাহ — কোথাও দুদণ্ড টেকা হয় না। এ ঝিমধরা দুপুরেই মাঝে মাঝে চৈতালি ঝড় ওঠে। মুহূর্তে ওলটপালট করে দেয় চারদিক। কখনও কখনও এক পশলা বৃষ্টি নামে। তপ্ত মাটি, পথ-ঘাট বৃষ্টির জল শুষে নিতে-না-নিতেই থেমে যায় তা।

শহুরে জীবনে চৈত্রের দুপুর: শহুরে জীবনে দুপুর বেলায় কোনো মন্থরতা নেই, নেই নির্জনতা। বড় বড় দালানগুলোতে বৈদ্যুতিক পাখা ঘোরে, কর্মব্যস্ত অনেক লোকের সময় কাটে ঘোলাটে কাচে ঘেরা অফিস ঘরে কিংবা বাড়িতে। এ রঙিন কাচ দিয়ে তারা প্রকৃতির আসল রূপ দেখতেই পায় না। তবে এমন অগ্নিঝরা দুপুরে নিম্নমধ্যবিত্ত আর দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ সীমাহীন কষ্টে ভোগে। জীবিকার তাগিদে তাদের পথে নামতে হয়। রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, মুটে-মজুরদের কষ্টের সীমা থাকে না। ইট-পাথরের শহরে গাছের বড়ো অভাব। শহরে তাই গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নেবার অবকাশ সীমিত। নেই পুকুর কিংবা নদীর জলে নাইবার সুযোগ। স্কুলফেরত ছেলেমেয়েরা ভরদুপুরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে যানবাহনের আশায়। দুপুরবেলায় দেখা দেয় যান সংকট। আবার কখনও রাস্তায় রাস্তায় যানজটও বেধে যায়। দুঃসহ গরমে রাস্তার ধারে বিক্রি হয় আইসক্রিম, বেলের শরবত, তরমুজ। খোলা পার্কগুলোর বেঞ্চিতে কিংবা গাছের ছায়ায় গামছা বিছিয়ে শুয়ে থাকে ভবঘুরে মানুষ। রিকশার টুংটাং, গাড়ির তীব্র হর্ন, মানুষের কোলাহল— সব কিছুর মধ্যেও আকাশপানে তাকালে মাঝে মাঝে দেখা যায় সূর্যের তীব্র আলো গায়ে মেখে একাকী উড়ে চলেছে বিষণ্ণ চিল।

গ্রামীণ পরিবেশে চৈত্রের দুপুর: চৈত্রের দুপুরের আসল রূপ দেখা যায় গ্রামে। ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির, গাছপালা নুয়ে পড়ে, পুকুর আর নদীর জলও শুকিয়ে যায়। প্রচণ্ড গরম থেকে স্বস্তি পেতে দুরন্ত বালকেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে পুকুর কিংবা নদীর জলে। গাছে গাছে পাখিদের কলকাকলি থেমে যায়। মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসে উদাসী ঘুঘুর ডাক। দুপুরের নিস্তব্ধতায় সে সুর যেন কান্নার মতোই শোনায়। গাছের ছায়ায় বসে ক্লান্ত রাখাল বাঁশি বাজায়। মাঠ ছেড়ে কৃষকও বিশ্রাম খোঁজে গাছের ছায়ায়। কেউ কেউ গামছা বিছিয়ে একটু ঘুমিয়ে নেবার চেষ্টা করে। ঘরের ভেতর কেউ কেউ শীতল পাটি বিছিয়ে সাময়িক আরাম খোঁজে। দুপুরের এ নিঝুম সময়টায় বাড়ির বৌ-ঝিদেরও তেমন ব্যস্ততা থাকে না। তারা কেউ নকশিকাঁথায় ফুল তোলে, কেউ পাখায় ফুল বোনে কেউ বা সুতো কাটে, স্মৃতি রোমন্থন করে ফিরে যায় বাপের বাড়ির গাঁয়ে। হঠাৎ হঠাৎ দমকা বাতাস বয়। সে বাতাসে শুকনো পাতারা ঝরে পড়ে। বাতাসে ধুলোবালি আর পাতার দল উড়ে উড়ে চলে যায় দূর থেকে দূরে। রাখালি বাঁশির সুর আর শুকনো পাতার মর্মর আওয়াজ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। নিস্তব্ধ দুপুর হয়ে ওঠে বেদনাবিধুর, বিষণ্ণ। এমনই মধ্য দুপুরের কথা রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন তাঁর গানে, এভাবে—

‘মধ্যদিনে যবে গান বন্ধ করে পাখি,
হে রাখাল, বেণু তব বাজাও একাকী ॥ 
প্রান্তর প্রান্তের কোণে রুদ্র বসি তাই শোনে,
মধুরের স্বপ্নাবেশে-ধ্যানমগন-আঁখি ---'

চৈত্রের দুপুর এমনই তপ্ত, দগ্ধ সময়ের প্রতিচ্ছবি। তবে দুপুরের স্থায়িত্ব কম হওয়ায় একসময় স্বস্তি নেমে আসে। 

উপসংহার: বাংলার প্রকৃতি বড়ই বিচিত্র। প্রতি বছর ছয়টি ঋতু আপন আপন বৈচিত্র্য নিয়ে এলেও বসন্ত ঋতুর সৌন্দর্য আলাদাভাবে সবাইকে ছুঁয়ে যায়। চৈত্রমাস এ ঋতুতে দান করেছে এক অনন্য রূপ। প্রকৃতিতে সজীবতার বিপরীতে চৈত্রের দুপুর আমাদের এক ভিন্ন সৌন্দর্যের সন্ধান দেয়। এ সৌন্দর্য বাংলার প্রকৃতির এক চিরন্তন ঐশ্বর্য।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ চৈত্রের দুপুর রচনা

শিক্ষার্থীরা  আজকে আমরা জানলাম চৈত্রের দুপুর রচনা সম্পর্কে  । যদি আজকের এই চৈত্রের দুপুর রচনা টি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন আর এই রকমই নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ । Search-Asked BD

চৈত্রের দুপুর অনুচ্ছেদ,চৈত্রের দুপুর,গ্রীষ্মের একটি দুপুর রচনা,একটি গ্রীষ্মের দুপুর রচনা class 6,বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা class 8,বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ চৈত্রের দুপুর অনুচ্ছেদ,চৈত্রের দুপুর,গ্রীষ্মের একটি দুপুর রচনা,একটি গ্রীষ্মের দুপুর রচনা class 6,বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা class 8,বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা class 7,একটি গ্রীষ্মের দুপুর রচনা,গ্রীষ্মের একটি দুপুর রচনা class 6,গ্রীষ্মের দুপুর রচনা ক্লাস 6,রচনা গ্রীষ্মের দুপুর,গ্রীষ্মের দুপুর রচনা,,

Post a Comment

Previous Post Next Post