এই বাংলা নববর্ষ রচনা টি যেকোন ক্লাসের জন্য। যারা ক্লাস ৭ম শ্রেনীতে আছে তাদের জন্যও এই বাংলা নববর্ষ রচনা টি। আবার ক্লাস দশম শ্রেনীতে আছো তাদের জন্য এই বাংলা নববর্ষ রচনা । অর্থাৎ ক্লাস ৭ম শ্রেনী থেকে ১০ম দশম শ্রেনী পর্যন্ত সবার প্রযোজ্য এই বাংলা নববর্ষ রচনা । রচনাটি পড়ার আগে তোমরা রচনা লেখার নিয়ম ও সুচিপত্রটি দেখা নাও।

বাংলা নববর্ষ

ভূমিকা: প্রতি বছর নতুন দিনের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে বাংলা নববর্ষ। আসে বিগত দিনের জীর্ণতা ও ক্লান্তিকে পেছনে ফেলে । আমাদের জাতীয় জীবনে বয়ে আনে উৎসবের আমেজ। সবাই মিলিত হই আনন্দের মিলন মেলায়। দিনে আমরা কামনা করি সবার সুখ ও সমৃদ্ধি।

দেশে দেশে নববর্ষ: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা জাতি নানাভাবে নববর্ষ উদযাপন করে। বাঙালি, ইরানি, চিনা, জাপানি, ইংরেজ, ফরাসি সবাই পালন করে নিজ নিজ নববর্ষ উৎসব। খ্রিষ্টানরা পয়লা জানুয়ারি পালন করে নববর্ষ। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমরা নববর্ষ পালন করে মহররমের আশুরা থেকে। ইরানিদের নববর্ষ হচ্ছে 'নওরোজ', আর আমরা বাঙালিরা পয়লা বৈশাখ উদযাপন করি নববর্ষ। তাতে থাকে নানা আয়োজন, নানা সমারোহ। নববর্ষের ভোর বাঙালির জীবনে আনে আনন্দবোধ, আনে ঐক্যচেতনা। এ দিনে আমরা ভুলতে চাই অতীতের দুঃখ-বেদনাকে। নতুন উদ্দীপনায় গড়তে চাই জীবনকে। কামনা করি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের । এ দিনে কবিগুরুর বাণী উচ্চারিত হয় আমাদের কণ্ঠে

“মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা

অগ্নিস্নানে সুচি হোক ধরা।”

বাংলা সনের ইতিহাস: বাংলা সনের ইতিহাস সম্পর্কে সুস্পষ্টরূপে জানা যায়নি। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও পণ্ডিতের মতে, মুঘল সম্রাট আকবর চান্দ্র হিজরি সনের সঙ্গে ভারতবর্ষের সৌরসনের সমন্বয় সাধন করে ১৫৫৬ সাল বা ৯২২ হিজরিতে বাংলা সন চালু করেন। আধুনিক গবেষকদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, মহামতি আকবর সর্বভারতীয় যে ‘ইলাহি’ সন প্রবর্তন করেছিলেন তার ভিত্তিতেই আকবরের কোনো প্রতিনিধি বা মুসলমান সুলতান বা নবাব বাংলা সনের প্রবর্তন করেন।

পহেলা বৈশাখ: পহেলা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম দিন। দিনটি বাংলাভাষী অঞ্চলে নববর্ষ হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। এটি বাঙালির সর্ববৃহৎ ও সর্বজনীন লোক-উৎসব। ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে সর্বস্তরের মানুষ দিনটিকে বরণ করে নেয়। আধুনিককালে নব আঙ্গিকে বর্ষবরণ উৎসবের সূচনা হয় কলকাতার ঠাকুর পরিবারে এবং শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগে। সেই ধারা ধীরে ধীরে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। 

নববর্ষে বাঙালির উৎসব অনুষ্ঠান: নববর্ষ বাঙালির জীবনে আসে নানা অনুষ্ঠানের মালা সাজিয়ে। ঘরদোর সাজানো হয় নতুন করে । রঙিন পোশাকে সাজে সবাই। ভোর না-হতেই গানে গানে বর্ষবরণের পালা শুরু হয়। একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানায়, পরস্পরের মঙ্গল কামনা করে।

নববর্ষের প্রধান অনুষ্ঠান: নববর্ষ দোকানি ও ব্যবসায়ীদের জন্যে নিয়ে আসে শুভ হালখাতা অনুষ্ঠান। তাঁরা তাঁদের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সুন্দর করে সাজান, ধূপ ও আগরবাতির সুগন্ধ দিয়ে সুবাসিত করে রাখেন। হালখাতা অনুষ্ঠানে আগতদের জানানো হয় প্রীতিময় শুভেচ্ছা। পারস্পরিক শুভ কামনার পর অতিথির হাতে তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন খাবার ও মিষ্টি। দোকানের মালিক নতুন খাতা খুলে বসেন। বছরের দেনা-পাওনার হিসাব মিটিয়ে ফেলা হয় এ উপলক্ষে। নববর্ষের আর একটি আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান বৈশাখি মেলা। মেলা উপলক্ষে খেলনা, মিঠাই, হাড়িকুড়ি, লোকশিল্পের পসরা সাজায় দোকানিরা। নাগরদোলার ঘূর্ণিপাক ছোটদের কাছে মেলার বিশেষ আকর্ষণ হয়।

 নববর্ষের অন্যান্য অনুষ্ঠান: বড় বড় শহরে নানাভাবে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় নববর্ষ। কবিতা আবৃতি, কবিগান, লোক সংগীত, চিত্র প্রদর্শনী, বইমেলা, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে বর্ষবরণে মেতে ওঠে নগরবাসী। ঢাকার রমনার বটমূলে ছায়াটনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদ আয়োজন করে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার। অন্যান্য শহরেও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান নগরবাসীর মন কাড়ে। নববর্ষ উপলক্ষে অন্যের শুভকামনা জানিয়ে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানো আধুনিক রীতি হয়ে উঠেছে।

নববর্ষের তাৎপর্য: নববর্ষের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবনে আনন্দময় সামাজিক যোগাযোগ ঘটে। ক্ষুদ্রতা ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠি আমরা। উদ্বুদ্ধ হই বৃহত্তর জীবনবোধ ও সমষ্টিচেতনায়। একই সঙ্গে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন হই আমরা। নববর্ষ এক অনবদ্য মিলনোৎসব। ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের জীবনে বিস্তার ঘটে আনন্দের। শুভ ইচ্ছা, শুভ সংকল্প এবং এগিয়ে চলার নতুন প্রেরণায় আমরা উজ্জীবিত হই।

নববর্ষের প্রভাব: বাঙালির জাতীয় জীবনে বাংলা নববর্ষের প্রভাব অপরিসীম। পহেলা বৈশাখ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয় আনন্দের ধারা। নতুন দিনের সম্ভাবনায় সবার মন উদ্বেল হয়ে ওঠে। মানুষের সাথে মানুষের সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়। আমাদের ঐতিহ্যের চেতনাও দৃঢ়তা লাভ করে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও নববর্ষের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা যায়। বিশেষত বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতি এ দিনটির ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল ।

উপসংহার: নববর্ষ আমাদের জীবনে এক আনন্দঘন দিন। আমাদের সংস্কৃতিতে এটি সার্বজনীন উৎসবের উপলক্ষ। এদিনটি আমাদের জীবনে নিয়ে আসে নতুন আশা, নতুন উদ্দীপনা, নতুন প্রেরণা। সবার শুভকামনার মধ্য দিয়ে দেশ, জাতি ও বিশ্বের অগ্রগতিতে নতুনভাবে সামিল হবার চেতনায় এ দিনে আমরা উজ্জীবিত হই।


আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলা নববর্ষ

শিক্ষার্থীরা  আজকে আমরা জানলাম বাংলা নববর্ষ রচনা সম্পর্কে  । যদি আজকের এই বাংলা নববর্ষ রচনা টি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন আর এই রকমই নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ । Search-Asked BD

বাংলা নববর্ষ রচনা,শুভ নববর্ষ রচনা,নববর্ষ রচনা,বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধ রচনা,শীতকাল রচনা class 7,শুভ হালখাতা লেখার নিয়ম,বিজয় দিবস রচনা class 10,শুভ হালখাতা png,শীতকাল রচনা class 5,বাংলা নববর্ষ রচনা class 6,হালখাতার কার্ড লেখার নিয়ম,bangla rochona for class 9,বিদ্যা মানুষের মূল্যবান সম্পদ সারাংশ,bijoy dibosh rochona class 7,বসন্তকাল রচনা,বাংলা নববর্ষ রচনার কবিতা,শুভ হালখাতা,শুভ হালখাতা লোগো,শীতকাল রচনা class 9,শীতকাল রচনা class 10,সুখ কবিতা class 7,ষড়ঋতু রচনা,বসন্তকাল রচনা ছোটদের,রচনা বাংলা নববর্ষ,পহেলা বৈশাখ রচনা,bijoy dibosh rochona class 5,বিজয় দিবস রচনা class 7,বিজয় দিবস রচনা ক্লাস ৮,সারাংশ বিদ্যা মানুষের মূল্যবান সম্পদ,হালখাতার কার্ড,বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা ক্লাস 8,শীতকাল রচনা বাংলা,শীতকালের উৎসব রচনা,বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা class 7,মেলা রচনা class 6,শীতকাল রচনা for class 5,আমার প্রিয় উৎসব রচনা ছোটদের,আমার দেখা একটি মেলা রচনা class 5,বসন্তকাল রচনা ক্লাস 6,হালখাতা কার্ড,শুভ হালখাতা ডিজাইন,প্রিয় ঋতু শীতকাল রচনা,ছোটদের শীতকাল রচনা,বাংলার নববর্ষ রচনা,বাংলার উৎসব রচনা ক্লাস 6,পয়লা বৈশাখ প্রবন্ধ,আমার দেখা একটি মেলা রচনা,rabindranather chotoder kobita,,


Post a Comment

Previous Post Next Post