Ad

প্রশ্ন ॥ ১ ॥ বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে ই, উ, ক্ষ, শ এবং রেফ () ব্যবহারের নিয়ম উদাহরণসহ লেখো। [সকল বোর্ড ২০১৮] 

উত্তর : নিচে বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে ই, উ, ক্ষ, শ এবং রেফ (র্র) ব্যবহারের নিয়ম উদাহরণসহ তুলে ধরা হলো।

 ই ব্যবহারের নিয়ম : আধুনিক বাংলা প্রমিত বানানে জাতি ও ভাষার নামের শেষে ই-কার ব্যবহৃত হবে। যেমন- বাঙালি, পাকিস্তানি, জাপানি, আরবি, ইরানি ইত্যাদি।

উ ব্যবহারের নিয়ম : সব অ-তৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি মিশ্র শব্দে কেবল উ-এর কার চিহ্ন উ-কার (ু) ব্যবহৃত হবে। যেমন— চুরি, টুপি, খুশি, বুড়ি, চুন, মুলা, পুজো ইত্যাদি। ক্ষ ব্যবহারের নিয়ম : ক্ষীর, ক্ষুর ও ক্ষেত শব্দ খির ও খেত না লিখে সংস্কৃত মূল অনুসরণে ক্ষীর, ক্ষুর ও ক্ষেতই লেখা হবে। তবে অ-তৎসম শব্দ খুদ, খুদে, খুা, খেপা, খিদে ইত্যাদি লেখা হবে।

শ ব্যবহারের নিয়ম : ইংরেজি থেকে আগত -sh, -sion, -ssion, -tion প্রভৃতি বর্ণগুচ্ছের জন্য বাংলায় শ ব্যবহৃত হয়। যেমন- শার্ট, স্টেশন, মিশন, ক্যাশ, সেশন ইত্যাদি।

রেফ (—) ব্যবহারের নিয়ম : রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমন- কার্ত্তিক, কৰ্ম্ম, ধৰ্ম্ম, সূৰ্য্য না হয়ে যথাক্রমে কার্তিক, কর্ম, ধর্ম, সূর্য হবে।


প্রশ্ন ॥২॥বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো। [কু. বো. ০২, ১০, ১৬, '১৭; ঢা. বো. ০২, '১৬; '১৭; চ. বো. ০৬; সি. বো. '০৪, '০৮, ১০, ১৯ য. বো. ১৫, ১৬, '১৯; ব. বো, ০৯, ১৭, ১৯; দি. বো. ১৩, ১৯; রা. বো. ’১৬, '১৭/

অথবা, আধুনিক বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম লেখো। /য. বো. ১৩/

অথবা, প্রমিত বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।/চ. বো. ১৩, '১৯/

উত্তর : বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো-

 ১.যেসব তৎসম শব্দের বানানে হ্রস্ব ও দীর্ঘ উভয় স্বরই শুদ্ধ সেসব ক্ষেত্রে, অ-তৎসম এবং বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে বানানে শুধু হ্রস্বস্বর যুক্ত হবে। যেমন— কিংবদন্তি, ধমনি, সূচি, চাকরি, একাডেমি, দাবি, নানি, বাঙালি, দাদি ইত্যাদি।

২.রেফ-এর পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমন— অর্চ্চনা, কৰ্ম্ম, ধৰ্ম্ম না হয়ে অর্চনা, কর্ম ও ধর্ম হবে।

৩.সমাসবদ্ধ শব্দগুলি পাশাপাশি লিখতে হবে।যেমন— সংবাদপত্র, পূর্বপরিচিত, অভূতপূর্ব, সংযতবাক ইত্যাদি ।

8.বিশেষণ পদ পূর্ববর্তী পদের সঙ্গে যুক্ত হবে না। যেমন— ভালো ছেলে, বিচিত্র পৃথিবী, সুন্দর দিন।

৫.সন্ধির ক্ষেত্রে ক, খ, গ, ঘ পরে থাকলে পূর্বপদের অন্তঃস্থিত ম স্থানে অনুস্বার  (ং) হবে। যেমন— অহম্ + কার = অহংকার, সম্ + ঘটন = সংঘটন।





প্রশ্ন ॥৩॥বাংলা ভাষার শব্দের শেষে ‘ই’ ও ‘ও’ ব্যবহারের দুটি নিয়ম উদাহরণসহ তুলে ধরো।

উত্তর : নিম্নে বাংলা একাডেমি প্রমিত বানানের নিয়মানুসারে ‘ই’ ও ‘ও ব্যবহারের দুটি নিয়ম উদাহরণসহ তুলে ধরা হলো-

১. বাংলা ভাষার নিশ্চয়াত্মক ‘ই’ শব্দের সঙ্গে কার চিহ্ন (ি) রূপে যুক্ত না হয়ে পূর্ণরূপ শব্দের শেষে যুক্ত হবে। যেমন— আজি, এখনি, তখনি, যখনি, যেমনি প্রভৃতি না হয়ে বরং আজই, এখনই, তখনই, যখনই, যেমনই হবে।

২. বাংলা ভাষায় অধিকন্তু অর্থরূপে ব্যবহৃত ‘ও’ শব্দের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে পূর্ণরূপ শব্দের শেষে যুক্ত হবে। যেমন— আজো কালো, তোমারো না হয়ে বরং আজও, কালও ও তোমারও হবে।


প্রশ্ন ॥8॥বাংলা ভাষার ‘না’ ও ‘নি’ ব্যবহারের নিয়মগুলো উদাহরণসহ আলোচনা কর।

উত্তর : বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়মানুসারে ‘না’ ও ‘নি’ ব্যবহারের নিয়মগুলো উদাহরণসহ নিচে দেওয়া হলো-

(১) না-বাচক অর্থে ‘নি’ শব্দ থেকে আলাদা না হয়ে বরং একসাথে বসবে। যেমন— আকাশ খায় নি। (অশুদ্ধ) আকাশ খায়নি। (শুদ্ধ) সাগর এখনো পড়তে বসে নি (অশুদ্ধ) সাগর এখনো পড়তে বসেনি। (শুদ্ধ)

(২) না-বাচক অর্থে ‘না’ শব্দের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে আলাদাভাবে বসবে। যেমন— সাব্বির মনোযোগ দিয়ে পড়েনা। (অশুদ্ধ) সাব্বির মনোযোগ দিয়ে পড়ে না। (শুদ্ধ) মুস্তাকীম রহমতউল্লাহকে চেনেনা। (অশুদ্ধ) মুস্তাকীম রহমতউল্লাহকে চেনে না। (শুদ্ধ)

(৩) না-বাচক অর্থে অনেক ‘না’ শব্দের পূর্বে শব্দের সঙ্গে প্রযুক্ত হতে পারে। যেমন— নাহক, নালায়েক, নামঞ্জুর, নারাজ, নাবালক ইত্যাদি। তবে অর্থের বিকৃতি যাতে না ঘটে সে জন্য প্রয়োজনে ‘না’ এবং শব্দের মাঝে হাইফেন (-) ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন- না-বলা কথা। না-দেখা মানুষ ইত্যাদি।








প্রশ্ন ॥ ৫ ॥তৎসম শব্দ সম্পর্কিত বানানের পাঁচটি নিয়ম লেখো। অথবা, বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে তৎসম শব্দের বানানের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো। [ঢা. বো. ১৯, রা. বো. ১৯]

উত্তর : বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের তৎসম শব্দ সম্পর্কিত ৫টি নিয়ম নিচে দেওয়া হলো-

১.যেসব শব্দে কেবল ই, ঈ বা উ, ঊ উভয় স্বরই শুদ্ধ সেসব শব্দে কেবল ই, উ হবে।

 যেমন— কিংবদন্তি, খঞ্জনি, দাবি, চুল্লি ইত্যাদি ।

2.রেফ-এর পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না।

যেমন— কার্য, কার্তিক, ধর্ম, কর্ম, পর্ব, পর্দা ইত্যাদি।

৩. সংস্কৃত ইন্‌-প্ৰত্যয়ান্ত শব্দের ঈ-কারান্ত রূপ সমাসবদ্ধ হলে সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী ই-কার হবে।

যেমন— গুণী → গুণিজন,

মন্ত্রী → মন্ত্রিসভা,

সহযোগী → সহযোগিতা।

৪. ইন্‌-প্ৰত্যয়ান্ত শব্দের শেষে ‘ত্ব’ ও ‘তা’ যুক্ত হলে ঈ-কারটি ই-কারে পরিণত হবে।

যেমন— একাকী → একাকিত্ব,

দায়ী → দায়িত্ব,

বন্দী → বন্দিত্ব,

স্থায়ী → স্থায়িত্ব,

কৃতী → কৃতিত্ব,

মনোযোগী → মনোযোগিতা,

সহযোগী → সহযোগিতা।

৫.শব্দের শেষে বিসর্গ (ঃ) থাকবে না।

যেমন—       অংশতঃ → অংশত,

অহরহঃ → অহরহ,

আপাততঃ → আপাতত,

ফলতঃ → ফলত,

বশতঃ → বশত,

মূলতঃ → মূলত ।





Post a Comment

Previous Post Next Post

Ad