এই কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক অনুচ্ছেদ রচনা টি যেকোন ক্লাসের জন্য। যারা ক্লাস ৭ম শ্রেনীতে আছে তাদের জন্যও এই কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক  রচনা টি। আবার ক্লাস দশম শ্রেনীতে আছো তাদের জন্য এই কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক অনুচ্ছেদ রচনা । অর্থাৎ ক্লাস ৭ম শ্রেনী থেকে ১০ম দশম শ্রেনী পর্যন্ত সবার প্রযোজ্য এই কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক অনুচ্ছেদ রচনা । অনুচ্ছেদ রচনাটি পড়ার আগে তোমরা রচনা লেখার নিয়ম ও সুচিপত্রটি দেখা নাও

কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক - প্রবন্ধ রচনা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক

কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক ( সকল বোর্ড ২০১৮ )

বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক ( ঢা. বো. ২০১০; চট্ট, বো, ২০১৪; চট্ট, বো, ২০১৪)

ভূমিকা : সরস, উর্বর, শস্যশ্যামল বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের খাদ্য সরবরাহের প্রধান উৎস কৃষি।
শিল্পোন্নয়ন ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও রয়েছে কৃষির ভূমিকা।

দেশের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জীবিকার উপায়ও কৃষি। ফলে বাংলাদেশের আর্থিক কাঠামোই হচ্ছে কৃষিভিত্তিক। সুতরাং সবাই যে বলেন 'কৃষক জাতির মেরুদণ্ড', তা অকারণে নয়। কৃষকের উৎপাদিত কাঁচামাল বিদেশে রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয় বৈদেশিক মুদ্রায়, সম্ভব হয় শিল্পায়ন। কর্মসংস্থানের শতকরা ৬০ ভাগ আসে কৃষিখাত থেকে। তাই দেশের অর্থনীতিতে কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের ভূমিকা কেবল গুরুত্বপূর্ণ নয়, অপরিহার্য।

জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা : কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা জাতীয় অর্থনীতিতে রাখে সুদূর প্রসারী প্রভাব। কৃষি উৎপাদন হ্রাস পেলে কেবল খাদ্য ঘাটটি হয় না, দ্রব্যমূল্যের উপরেও পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। দ্রব্যমূল্য পাগলা ঘোড়ার মতো অস্বাভাবিকভাবে ছুটে চলে। পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক শিল্প-কারখানার স্বাভাবিক উৎপাদনে সংকট দেখা দেয়। অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্যেও সৃষ্টি হয় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া। অন্যদিকে কৃষি উৎপাদন ভালো হলে অর্থনীতি হয়ে ওঠে সবল ও ঘাতসহ ।


জাতীয় আয় সৃষ্টিতে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা : জাতীয় আয় সৃষ্টিতে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ 
আমাদের দেশের উৎপাদিত পণ্যের অধিকাংশই আসে কৃষি থেকে। খাদ্যদ্রব্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য থেকে শুরু করে শিল্পের কাঁচামাল জোগায় কৃষি। ফলে সবের পেছনে রয়েছে কৃষকের ঘাম-নিংড়ানো শ্রম। কৃষকের উৎপাদিত যেসব পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়, সেগুলো বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের উপায়। এভাবে কৃষি ও কৃষক জাতীয় আয় সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখে ।


খাদ্য উৎপাদনে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা : আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদনে সিংহভাগ ভূমিকা পালন করে কৃষক। 
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য খাদ্য ভাত, মাছ, মাংস, ডাল, আলু, তরকারি, শাকসবজি সরই আসে কৃষি থেকে আর তা উৎপাদন করে কৃষক। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ খাদ্যশস্য কৃষকই জোগান দিয়ে থাকে।


পুষ্টি সমস্যা সমাধানে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা : পুষ্টিহীনতা আমাদের দেশের এক বিরাট সমস্যা। গ্রামীণ জনসংখ্যার 
২১ শতাংশ লোক অপুষ্টির শিকার। অসংখ্য নারী ও শিশু রক্তস্বল্পতায় ভোগে। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে প্রতি বছর ৩০ হাজার শিশু অন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, শাকসবজি জোগান এ দেশের মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর করতে সাহায্য করছে।


শিল্পায়নে কৃষি ও কৃষকের অবদান : বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত অনেক শিল্প কৃষিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। বাংলাদেশের 
কৃষকরা এসব শিল্পের একমাত্র জোগানদার। যেমন বাংলাদেশের বস্ত্র ও চিনি শিল্পের প্রধান উপকরণ আসে কৃষি থেকে। এভাবে দেশে অসংখ্য শিল্প রয়েছে যেগুলো কাঁচামালের একমাত্র জোগানদাতা কৃষক।


রপ্তানি আয়ে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা : বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্যে একসময় পাটকে বাংলাদেশের সোনালি আঁশ বলা হতো। এখানও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। পাটের পরে আছে চা। এরকম আরও বহু কৃষিপণ্য আছে যা রপ্তানি করে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে।


কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা : কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কৃষকের ভূমিকা আরও তাৎপর্যপূর্ণ। কৃষক' যখন কৃষিকাজ করে তখন বিভিন্ন পর্যায়ে তাকে শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। পাশাপাশি কৃষি থেকে উৎপন্ন কাঁচামাল দিয়ে প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কারখানায়ও নতুন নতুন কর্মের সংস্থান হচ্ছে। কৃষিখাতের মাধ্যমে দেশে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

কৃষি উন্নয়ন : এ দেশে দীর্ঘকাল ধরে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ চলে আসছে। কৃষি উৎপাদনে এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে এতকাল কৃষক ছিল লাঙ্গল, গরু ও মইয়ের ওপর নির্ভরশীল। সে জায়গায় এখন বহুক্ষেত্রে আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়েছে। এর ফলে আগের চেয়ে কৃষিফলন অনেক ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি পেয়েছে কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ধান গবেষণা কেন্দ্র উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ধান গবেষণা কেন্দ্র বহুমুখী শস্য গবেষণায় নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মৃত্তিকা ও শস্য ব্যবস্থাপনা, শস্যের রোগবালাই নিরসন, ক্ষতিকর পতঙ্গ ব্যবস্থাপনা, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, কৃষি উপকরণ উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কৃষিখাতে পারমাণবিক কৃষি গবেষণার ফলে বিভিন্ন শস্যের ৩৭টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, কৃষি উন্নয়নের ফলে ধান, পাট, তুলা, আখ, ফুল ও রেশমগুটি চাষে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। বাগান সম্প্রসারণ অধিকতর গুরুত্ব পাচ্ছে। মাছ, চাষ, সবজি ফলন, পশুসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি কাজে অনেক সাফল্য এসেছে। এ ছাড়া মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, বীজ উন্নয়ন ও বিতরণের কাজে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে।


কৃষকের বর্তমান অবস্থা : বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষক ভূমিহীন। অন্যের জমিতে তারা বর্গাচাষ করে। আবার অনেকের নিজস্ব হালের বলদসহ পুঁজির সমস্যা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা ও দেশের চাপে পড়ে সরকার দিন দিন কৃষির উপর ভর্তুকি কমিয়ে আনছে। ফলে কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পায় না। তারা সরাসরি পণ্য বাজারজাত করতে পারে না। মধ্যস্বত্বভোগীরা তাদের কাছ থেকে কম দামে ফসল কিনে বেশি দামে বাজারজাত করে। ফলে কৃষি তাই কৃষকদের জন্যে তেমন লাভজনক পেশা নয়।


উপসংহার : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা অপরিহার্য। কৃষকের ঘনিষ্ঠ শ্রমের উপরেই এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বহুলাংশে নির্ভরশীল। কিন্তু বাংলাদেশের কৃষি সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারক মহলে কিছুটা গুরুত্ব পেলেও কৃষকের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও নাজুক। বিশেষ করে তাদের সামাজিক মর্যাদা এখনও নিম্নমানের। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের কৃষিকে যুগোপযোগী আধুনিকায়ন এবং কৃষকের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। তাহলেই বাংলাদেশের এই অবহেলিত কৃষকদের ভাগ্য ফিরবে, যারা দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে। কৃষকদের ভাগ্য ফিরলে বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে একুশ শতকে অগ্রসরতার পথে এগিয়ে যেতে পারবে।


অনুরূপ রচনা : বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের সমস্যা, বাংলাদেশের কৃষক, বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন ]



আর্টিকেলের শেষকথাঃ কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক  রচনা

শিক্ষার্থীরা  আজকে আমরা জানলাম কৃষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং কৃষক রচনা সম্পর্কে  । যদি আজকের এই শীতের সকাল অনুচ্ছেদ রচনা টি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন আর এই রকমই নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ । Search-Asked BD


Post a Comment

Previous Post Next Post